গণমাধ্যম নিউজ
গাজা নগরীতে অবস্থানকারী সব ফিলিস্তিনিকে শহরটি ছেড়ে যেতে নির্দেশ দিয়েছে ইসরায়েলি সামরিক বাহিনী।গাজা নগরীতে থাকা ফিলিস্তিনিদের দক্ষিণ দিকে যেতে বলা হয়েছে।উত্তর, দক্ষিণ ও মধ্য গাজায় ইসরায়েল নতুন করে হামলা জোরদারের পরিপ্রেক্ষিতে এমন নির্দেশ দেওয়া হলো। এই হামলায় গত ৪৮ ঘণ্টায় বেশ কয়েকজন ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন।গতকাল বুধবার উড়োজাহাজ থেকে লিফলেট ফেলে গাজা নগরীতে থাকা সব ফিলিস্তিনিকে শহর ছাড়তে বলা হয়। তাদের নিরাপদে দক্ষিণের দেইর আল-বালাহ ও আজ জাওয়াইদায় যেতে বলা হয়। তবে ইসরায়েলি সামরিক বাহিনীর এই নির্দেশ না মানতে গাজা নগরীর বাসিন্দাদের প্রতি আহ্বান জানিয়েছে হামাস-শাসিত গাজা উপত্যকার স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়। তারা এই নির্দেশকে ফিলিস্তিনিদের বিরুদ্ধে ইসরায়েলি সামরিক বাহিনীর মনস্তাত্ত্বিক যুদ্ধের অংশ হিসেবে বর্ণনা করেছে।
গাজার আল-আওদাহ নামের একটি বিদ্যালয়ে ইসরায়েলি বিমান হামলার এক দিন পরই গাজা নগরী খালি করার নির্দেশ এল। এই হামলায় অন্তত ৩০ জন নিহত হয়েছে। আহত ৫৩ জন। হতাহতদের বেশির ভাগই নারী ও শিশু।
জাতিসংঘ বলছে, গাজা নগরী খালি করার ইসরায়েলি নির্দেশ ফিলিস্তিনি পরিবারগুলোর ভোগান্তিকে আরও তীব্র করে তুলবে। তাদের মধ্যে এমন অনেকে আছে, যারা বহুবার বাস্তুচ্যুত হয়েছে।
জাতিসংঘ মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেসের মুখপাত্র স্টিফেন ডুজারিক বলেন, বেসামরিক নাগরিকদের সুরক্ষা অবশ্যই নিশ্চিত করতে হবে।
দেইর আল-বালাহতে থাকা আল জাজিরা প্রতিবেদক বলেন, ইসরায়েলি হামলা জোরদার হওয়ায় গাজা নগরীতে থাকা বাসিন্দাদের মনে হচ্ছে, তারা আটকা পড়েছে। তারা কোথায় যাবে, তা জানেন না। এখানে কোনো বেসামরিক প্রতিরক্ষা দল নেই। নেই রেডক্রসও। ফিলিস্তিনিদের নিরাপদে সরিয়ে নেওয়ার কেউ এখনে নেই।
গাজা নগরীর অংশবিশেষ থেকে বাসিন্দাদের সরে যেতে ইসরায়েল প্রথম আনুষ্ঠানিক নির্দেশ দেয় গত ২৭ জুন। পরে আরও দুটি নির্দেশ দেওয়া হয়। গতকাল পুরো শহর ফাঁকা করার নির্দেশ দেওয়া হলো।
গত বছরের ৭ অক্টোবর ইসরায়েলে হামলা চালায় হামাস। ইসরায়েলি তথ্যের ভিত্তিতে আল-জাজিরার হিসাবে এই হামলায় ১ হাজার ১৩৯ জন নিহত হয়। ২৫০ জনকে জিম্মি করা হয়, যাদের অনেকে এখনো গাজায় আছে।
জবাবে ৭ অক্টোবর থেকে গাজায় নির্বিচারে হামলা শুরু করে ইসরায়েলি বাহিনী। গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের হিসাব, ইসরায়েলি হামলায় ৩৮ হাজারের বেশি ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছে। আহতের সংখ্যা ৮৮ হাজারের বেশি।