মাঝ আকাশে মারাত্মক টার্বুলেন্সের শিকার সিঙ্গাপুর এয়ারলাইন্সের এসকিউ৩২১ ফ্লাইটের যাত্রীরা অন্য একটি উড়োজাহাজে করে বুধবার ভোরে ব্যাংকক থেকে সিঙ্গাপুরে পৌঁছেছেন। গত সোমবার স্থানীয় সময় সন্ধ্যায় ফ্লাইট এসকিউ৩২১ লন্ডনের হিথ্রো বিমানবন্দর থেকে ২১১ জন যাত্রী ও ১৮জন ক্রু নিয়ে সিঙ্গাপুরের উদ্দেশ্যে রওয়ানা করেছিল। কিন্তু নির্দিষ্ট গন্তব্য থেকে মাত্র দেড় ঘণ্টার দূরত্বে থাকার সময় বঙ্গোপসাগরের উপর মাঝ আকাশে সেটি পরপর কয়েকবার মারাত্মক টার্বুলেন্সের শিকার হয়। তখন পাইলট ঘুরে গিয়ে ব্যাংককের সূবর্ণভূমি বিমানবন্দরে জরুরি অবতরণের অনুমতি চান। বোয়িং ৭৭৭-৩০০ইআর উড়োজাহাজটি ব্যংকক সময় মঙ্গলবার বিকাল পৌনে ৪টার দিকে সূবর্ণভূমি বিমানবন্দরে জরুরি অবতরণ করে। টার্বুলেন্সের কারণে পরপর কয়েকবার তীব্র ঝাঁকুনিতে ফ্লাইটের একজন যাত্রী হৃদযন্ত্রের ক্রিয়া বন্ধ হয়ে মারা যান। নয়জন ক্রুসহ আহত অবস্থায় ২৩ জনকে হাসপাতালে পাঠানো হয়। আহতদের মধ্যে সাতজনের অবস্থা গুরুতর বলে জানিয়েছে থাইল্যান্ড কর্তৃপক্ষ। আরও ১৪ জন আহত হলেও তাদের আঘাত সামান্য। মারা যাওয়া ব্যক্তি ৭৩ বছর বয়সী একজন বৃটিশ। তিনি তার স্ত্রীকে নিয়ে ভ্রমণ করছিলেন।উড়োজাহাজটির যাত্রীরা সিঙ্গাপুর পৌঁছানোর পর সেটিতে থাকা ২৮ বছর বয়সী শিক্ষার্থী জাফরান আজমির বলেন, “আমি দেখলাম উল্টো পাশের যাত্রীরা আড়াআড়িভাবে উপরে উঠে যাচ্ছে, উড়োজাহাজটির সিলিংয়ে বাড়ি খাচ্ছে এবং খুব খারাপভাবে নিচে নেমে আসছে, লোকজন তাদের মাথায় আঘাত পেয়েছে এবং তাদের মাথা গভীরভাব কেটে গেছে।” উড়োজাহাজটি সূবর্ণভূমি বিমানবন্দরে পৌঁছানোর পর সেটির ভেতরের যেসব ছবি প্রকাশ করা হয়েছে সেখানে দেখা গেছে, সেটির ভেতরে মাথার উপরের কেবিন প্যানেল ফেটে গেছে, অক্সিজেন মাস্ক এবং প্যানেল সিলিং থেকে ঝুলছে এবং যাত্রীদের মালামাল ভেতরে ছড়িয়ে-ছিটিয়ে আছে। দুর্ঘটনার শিকার উড়োজাহাজটির ১৩১ জন যাত্রী ও ১২ জন ক্রুকে নিয়ে সিঙ্গাপুর এয়ারলাইন্সের আরেকটি উড়োজাহাজ ব্যাংকক থেকে বুধবার স্থানীয় সময় ভোর ৫টায় সিঙ্গাপুর পৌঁছায়।সেটির ২১১ জন যাত্রীর মধ্যে অস্ট্রেলিয়া, যুক্তরাজ্য এবং সিঙ্গাপুরের নাগরিকরা রয়েছেন। যারা আহত হয়েছেন তারা এবং তাদের স্বজনরা ব্যাংককে রয়ে গেছেন।যদিও এয়ারলাইন কর্তৃপক্ষ ৩০ জন আহত হওয়ার কথা জানিয়েছন। তবে থাইল্যান্ডের সামিতিভেজ হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ ৭০ জনকে চিকিৎসা দেওয়ার কথা জানিয়েছে।