গণমাধ্যম নিউজ
গাজায় খাবার বিক্রির ওপর নিষেধাজ্ঞা ইসরায়েলের সামরিক বাহিনী তুলে নিয়েছে বলে জানিয়েছেন ফিলিস্তিনের কর্মকর্তা, ব্যবসায়ী এবং আন্তর্জাতিক সাহায্য সংস্থার কর্মীরা।
সেখানকার জনগণ বলছে, রাফায় অভিযান শুরুরকয়েকদিন পর ইসরায়েলের সেনা কর্তৃপক্ষ দেশটির ও ফিলিস্তিনের সরবরাহকারীদের কাছ থেকে টাটকা ফল, সবজি ও দুগ্ধজাত পণ্য এনে বেচতে গাজার ব্যবসায়ীদের অনুমতি দিয়েছে।
রাফায় ইসরায়েলের অভিযানের পর থেকে মিশর সীমান্ত দিয়ে জাতিসংঘের সহায়তা ঢোকা বন্ধ হয়ে গেছে। এই পরিস্থিতিতে দুর্ভিক্ষের আশঙ্কায় ইসরায়েল বৈশ্বিক চাপের মুখে পড়েছে।গাজা চেম্বার অব কমার্সের চেয়ার আয়েদ আবু রামাদান বলেন, “যুদ্ধের আগে যারা পশ্চিম তীর ও ইসরায়েলের খাবার বিক্রি করছিল, গাজার সেই সব পরিবেশকদের ফোন করেছিল ইসরায়েল। পণ্য সংগ্রহের কাজে সমন্বয় করতে তারা প্রস্তুত বলে জানিয়েছে।”
ফিলিস্তিনের কর্মকর্তা, ব্যবসায়ী ও বাসিন্দাদের বরাতে রয়টার্স লিখেছে, গত অক্টোবরে যুদ্ধ শুরু হওয়ার পর ইসরায়েল ও পশ্চিম তীরে উৎপাদিত পণ্য প্রথমবারের মতো গাজায় প্রবেশের অনুমতি পেল।
সহায়তা স্থানান্তরের দায়িত্বে থাকা ইসরায়েলি সামরিক বাহিনীর শাখা সিওজিএটি রয়টার্সকে বলেছে, গাজায় মানবিক সহায়তা এবং খাবার বিক্রি বাড়ানোর উপায় তারা খুঁজছে।“গাজা ভূখণ্ডে কিছু খাবার আনার জন্য বেসরকারি খাতকে অনুমতি দেওয়া হয়েছে, যাতে সেখানে খাবার বিক্রি বৃদ্ধি পায়,” বলছিলেন মুখপাত্র শিমন ফ্রিডম্যান।
আরও বেশি বাণিজ্যিক পণ্য গাজায় প্রবেশের অনুমতি দিতে ত্রাণকর্মীরা কয়েক মাস ধরেই ইসরায়েলের কাছে দাবি করছিলেন, যাতে ময়দা, টিনজাত বিভিন্ন খাবার আন্তর্জাতিক সহায়তা হিসেবে আসতে পারে।
ফিলিস্তিনি কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, দক্ষিণ গাজা ও ইসরায়েলের মধ্যবর্তী কেরেম শালোম সীমান্ত ক্রসিং দিয়ে সরবরাহের গতির কোনো ঠিক নেই। কত ট্রাক প্রবেশ করবে তা নির্ভর করে ইসরায়েলের অনুমতির উপর। প্রতিদিন ২০ থেকে ১৫০টি ট্রাক প্রবেশ করছে, যার প্রতিটি ২০ টন পর্যন্ত খাদ্য বহন করে।ইউএস এজেন্সি ফর ইন্টারন্যাশনাল ডেভেলপমেন্ট জানিয়েছে, প্রতিদিন যেখানে ৬০০ ট্রাক খাবার প্রয়োজন, সেখানে তার তুলনায় এই সংখ্যা খুবই কম।
জাতিসংঘের হিসাবে, গত ৭ অক্টোবর দক্ষিণ ইসরায়েলে হামাসের হামলার আগে গাজায় প্রতিদিন গড়ে ৫০০টি ট্রাকে খাবার ও ওষুধ প্রবেশ করত।
গাজার তিনজন বাসিন্দা বলেছেন, তারা বাজারে হিব্রু লেবেলযুক্ত পণ্য দেখেছেন, যার মধ্যে ইসরায়েলি বসতির তরমুজও আছে। তবে নগদ অর্থের সংকটে থাকা বাস্তুচ্যুত পরিবারগুলোর জন্য খাবার কেনা কঠিন হয়ে উঠেছে।
পাঁচ সন্তানের বাবা গাজার বাসিন্দা আবেদ আবু মুস্তাফা বলেন, “আমার তিন বছর বয়সী বাচ্চা ডিমের জন্য কান্নাকাটি করেছিল বলে আমি ১৬ শেকেল (৫ ডলার) দিয়ে দুটি ডিম কিনেছি।
“সাধারণত আমি এই দামে ৩০টি ডিম কিনতে পারতাম।”