গণমাধ্যম নিউজ
ভারতের অষ্টাদশ লোকসভা নির্বাচনে সপ্তম তথা শেষ ধাপের ভোটগ্রহণ চলছে।
শনিবার এই ধাপে ভোট হচ্ছে সাতটি রাজ্য এবং একটি কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলের মোট ৫৭টি আসনে। এসব আসনে মোট প্রতিদ্বন্দ্বির সংখ্যা ৯০৭ জন।
বলা হচ্ছে, প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর ‘ভাগ্যপরীক্ষা’ এই দফাতেই। এ নিয়ে তৃতীয় বার উত্তরপ্রদেশের বারানসী আসনে ভোটে লড়ছেন মোদী।
এছাড়া বিজেপির অন্য গুরুত্বপূর্ণ প্রার্থীদের মধ্যে রয়েছেন কঙ্গনা রানাউত (মণ্ডী), অনুরাগ ঠাকুর (হামিরপুর), রবিশঙ্কর প্রসাদ (পটনা সাহিব)।
কংগ্রেসের টিকিটে লড়ছেন পঞ্জাবের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী চরণজিৎ সিংহ চন্নী (জালন্ধর) এবং দুই প্রাক্তন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী আনন্দ শর্মা (কাংড়া) এবং মণীশ তিওয়ারি (চণ্ডীগড়)।
অন্যদিকে এই পর্বে পশ্চিম বঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জির ভাইপো এবং তৃণমূল কংগ্রেসের প্রার্থী অভিষেক ব্যানার্জি লড়ছেন ডায়মান্ড হারবারে।আরেক হেভিওয়েট প্রার্থী মধ্যে রয়েছেন রাষ্ট্রীয় জনতা দলের প্রধান লাল প্রসাদ যাদবের মেয়ে মিশা ভারতী লড়ছেন পাটালীপুত্র আসনে।
বিশ্বের সবচেয়ে বড় গণতান্ত্রিক দেশ ভারতে এবার লোকসভা নির্বাচন হচ্ছে সাত ধাপে, যা শুরু হয়েছে ১৯ এপ্রিল।
প্রথম ধাপে ২১ রাজ্যের ১০২টি আসনে ভোটের পর দ্বিতীয় ধাপে ২৬ এপ্রিল ১৩ রাজ্যের ৮৮ আসনে, তৃতীয় ধাপে ৭ মে ১১ রাজ্যের ৯৪ আসনে, চতুর্থ ধাপে ১০ রাজ্যের ৯৬ আসনে, পঞ্চম ধাপে ২০ মে ৮ রাজ্যের ৪৯ আসনে এবং ষষ্ঠ ধাপে ২৫ মে ৫৮ আসনে ভোট হয়।শেষ ধাপে মোট ভোটার সংখ্যা ১০ কোটি বেশি ভোটার ভোট দেবেন।
ভোট শুরুর আগে এক বার্তায় প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী ভোটারদের কেন্দ্রে যাওয়ার আহ্বান জানিয়ে বলেন, “আসুন আমরা একসাথে আমাদের গণতন্ত্রকে আরও প্রাণবন্ত এবং অংশগ্রহণমূলক করি।“
টানা তৃতীয় মেয়াদে ক্ষমতায় আসতে মোদীর ভারতীয় জনতা পার্টি (বিজেপি) এবার দুই ডজন দলের একটি মোর্চা সঙ্গে হাড্ডাহাড্ডি লড়াইয়ে নেমেছে। বিরোধী এই মোর্চার নেতৃত্বে রয়েছে কংগ্রেস। ধারণা করা হচ্ছে, এবারও মোদীর দল সংখ্যাগরিষ্ঠ আসনে জয়ী হবে।
যেখানে বেকারত্ব ও মুদ্রাস্ফীতি ভোটারদের প্রধান উদ্বেগ সেখানে ১৪০ কোটি মানুষের হিন্দু সংখ্যাগরিষ্ঠ দেশটিতে গ্রীষ্মের প্রচণ্ড তাপমাত্রার সঙ্গে অস্বাভাবিক তাপপ্রবাহ ভোটারদের ক্লান্তি বাড়িয়ে তুলেছে।
শুক্রবার ভোটের আগে বিহার ও উত্তরপ্রদেশে হিটস্ট্রোকে প্রায় দুই ডজন নির্বাচনী কর্মকর্তার মৃত্যু হয়েছে বলে জানিয়েছে কর্তৃপক্ষ।
মোদী এবং কংগ্রেস নেতা রাহুল গান্ধী উভয়ই বিপুল ভোটে একে অপরকে হারানোর পূর্বাভাস দিয়েছেন এবং বলেছেন, তাদের নিজ নিজ জোট পরবর্তী সরকার গঠন করতে চলেছে।
গেল দশ বছরে নিজের যত অর্জন, তাকে পুঁজি করেই নির্বাচনি প্রচারে নেমেছিলেন মোদী।
কিন্তু দ্রুতই তার প্রচারের মূল লক্ষ্য হয়ে উঠে বিরোধীরা, যাদের বিরুদ্ধে মোদীর অভিযোগ ছিল সংখ্যালঘু মুসলিমদের পক্ষ নেওয়ার।
বিশ্লেষকরা বলছেন, প্রথম দফায় কম ভোট পড়ায় বিজেপি সমর্থকরা বিপুল সংখ্যায় ভোট দিচ্ছেন না বলে উদ্বেগ ছড়িয়ে পড়ার পর মোদীর হিন্দু জাতীয়তাবাদ ধারণাকে উজ্জীবিত করতেই সম্ভবত এই নীতি বদল করা হয়েছে।
অন্যদিকে বিরোধীদের প্রচারের বেশিরভাগ জুড়েই ছিল মূলত ইতিবাচক পদক্ষেপ এবং মোদীর ‘একনায়কতান্ত্রিক’ শাসন থেকে সংবিধানকে বাঁচানো নিয়ে।
এই ধাপের ভোট শেষে ৪ জুন ঘোষণা করা ফলাফল।