গণমাধ্যম নিউজ
ঘূর্ণিঝড় রেমাল এগিয়ে আসায় জানমাল বাঁচাতে আশ্রয়কেন্দ্রে ঠাঁই নিয়েছে নারী ও শিশুসহ উপকূলের ৫২ হাজারের বেশি মানুষ।দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা অধিদপ্তরের মহাপরিচালক মিজানুর রহমান বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে জানান, রোববার বেলা ১১টা পর্যন্ত ১৯ জেলার ৮ হাজার ৪৬৪টি আশ্রয়কেন্দ্রে মোট ৫২ হাজার ৪৪৬ জন ঠাঁই নিয়েছেন। সময় গড়ানোর সঙ্গে সঙ্গে এই সংখ্যা বাড়ছে। এছাড়া ৪ হাজার ৬২৩টি গবাদিপশুও আশ্রয়কেন্দ্রগুলোতে উঠেছে৷ “পরিস্থিতি সামাল দিতে ১১৮৫টি মেডিকেল টিম গঠন করা হয়েছে৷ আর আমাদের মন্ত্রী মহোদয় (দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ প্রতিমন্ত্রী মো. মহিববুর রহমান) সকল মন্ত্রণালয়কে মিটিংয়ে ডেকে কোন মন্ত্রণালয়ের কী করণীয় সে নির্দেশনা দিয়েছেন, যাতে ক্ষয়ক্ষতি কমিয়ে আনা যায়।”
ঘূর্ণিঝড় রেমাল আরো শক্তি সঞ্চয় করে প্রবল ঘূর্ণিঝড়ে পরিণত হওয়ার পর রোববার সকালে সংকেতও বাড়ানো হয়। মোংলা ও পায়রা বন্দরে জারি করা হয় ১০ নম্বর মহাবিপদ সংকেত। আর চট্টগ্রাম ও কক্সবাজার সমুদ্রবন্দরকে ৯ নম্বর বিপদ সংকেত দেখাতে বলে আবহাওয়া অধিদপ্তর।
আবহাওয়ার বিশেষ বুলেটিনে বলা হয়েছে, প্রবল ঘূর্ণিঝড় রেমাল রোববার সকাল ৯টায় চট্টগ্রাম সমুদ্রবন্দর থেকে ৩৮০ কিলোমিটার দক্ষিণপশ্চিমে, কক্সবাজার সমুদ্রবন্দর থেকে ৩৪০ কিলোমিটার দক্ষিণপশ্চিমে, মোংলা সমুদ্র বন্দর থেকে ২৯৫ কিলোমিটার দক্ষিণে এবং পায়রা সমুদ্রবন্দর থেকে ২৬৫ কিলোমিটার দক্ষিণে অবস্থান করছে । ঘূর্ণিঝড় কেন্দ্রের ৬৪ কিলোমিটারের মধ্যে বাতাসের সর্বোচ্চ একটানা গতিবেগ ছিল ৯০ কিলোমিটার; যা দমকা বা ঝড়ো হাওয়ার আকারে ১২০ কিলোমিটার পর্যন্ত বাড়ছিল। ঘূর্ণিঝড়ের প্রভাবে দেশের উপকূলীয় এলাকায় ইতোমধ্যে ঝড়ো হাওয়ার সঙ্গে বৃষ্টি শুরু হয়েছে। বর্তমান উত্তরমুখী গতিপথ অব্যাহত থাকলে প্রবাল ঘূর্ণিঝড় রেমাল রোববার সন্ধ্যা বা মধ্যরাতের দিকে বাংলাদেশের খেপুপাড়া ও ভারতের সাগর দ্বীপের মাঝামাঝি এলাকা দিয়ে উপকূল অতিক্রম করতে পারে।
আবহাওয়া অফিস বলছে, প্রবল ঘূর্ণিঝড়ের অগ্রবর্তী অংশ ও বায়ুচাপের পার্থক্যের আধিক্যের প্রভাবে উপকূলীয় জেলা খুলনা, সাতক্ষীরা, বাগেরহাট, পিরোজপুর, ঝালকাঠি, বরগুনা, বরিশাল, ভোলা, পটুয়াখালী, ফেনী, কুমিল্লা, নোয়াখালী, লক্ষ্মীপুর, চাঁদপুর, চট্টগ্রাম, কক্সাবাজার এবং তাদের অদূরবর্তী দ্বীপ ও চরের নিম্নাঞ্চল স্বাভাবিক জোয়ারের চেয়ে ৮-১২ ফুট অধিক উচ্চতার জলোচ্ছ্বাসে প্লাবিত হতে পারে।
প্রবল ঘূর্ণিঝড়ের প্রভাবে রাজশাহী, রংপুর, ময়মনসিংহ, ঢাকা, খুলনা, বরিশাল, চট্টগ্রাম ও সিলেট বিভাগে দমকা বা ঝড়ো হাওয়াসহ ভারি (৪৪-৮৮ মিলিমিটার/২৪ ঘণ্টা) থেকে অতি ভারি (২৪ ঘণ্টায় ৮৯ মিলিমিটারের বেশি) বর্ষণ হতে পারে। অতি ভার বর্ষণের প্রভাবে কক্সবাজার, বান্দরবান, রাঙ্গামাটি, খাগড়াছড়ি ও চট্টগ্রামের পাহাড়ি অঞ্চলের কোথাও কোথাও ভূমিধস হতে পারে বলেও সতর্ক করেছে আবহাওয়া অফিস।
উত্তর বঙ্গোপসাগর ও গভীর সাগরে অবস্থানরত মাছ ধরার নৌকা ও ট্রলারকে পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত নিরাপদ আশ্রয়ে থাকতে বলা হয়েছে।