গণমাধ্যম নিউজ
ভারতের লোকসভা নির্বাচনের পুরোটা সময়জুড়ে বিজেপি তাদের এনডিএ জোটের জন্য ৪০০টি আসনের লক্ষ্যে ‘এবার ৪০০ পার’ শ্লোগান দিয়ে গেছে, কিন্তু ভোট গণনা শুরুর পর থেকে প্রায় সাত ঘণ্টা পেরেনোর পরও ক্ষমতাসীন এ জোট তিনশর চেয়েও কম আসনে এগিয়ে রয়েছে।
প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর দল ভারতীয় জনতা পার্টির (বিজেপি) নেতৃত্বাধীন এনডিএ জোটের যে এবার আর ৪০০ আসন ‘পার’ করা হচ্ছে না, তা ইতোমধ্যেই অনেকটা পরিষ্কার হয়ে গেছে। তাদের লক্ষ্যের তুলনায় অনেক কম ২৯০ আসনে এগিয়ে রয়েছে এই জোটের প্রার্থীরা।
তারা ৩০০ আসনে জয় পাবে কি না, তাই নিয়ে সন্দেহ দানা বাঁধছে। তবে তারপরও গণনার প্রদর্শিত ফল অনুযায়ী জোট হিসেবে এনডিএ একক সংখ্যাগরিষ্ঠতা পাবে বলেই ধারণা পাওয়া যাচ্ছে। কিন্তু জোটের প্রধান শরিক দল প্রধানমন্ত্রী মোদীর বিজেপি সম্ভবত একক সংখ্যাগরিষ্ঠতা হারাতে চলেছে।এখন পর্যন্ত ভারতের নির্বাচন কমিশনের প্রকাশিত ফলাফলে ভোটের যে চিত্র দেখা যাচ্ছে, তাতে মোদীর দল বিজেপি এগিয়ে থাকা সবগুলো আসনে জয় পেলেও ভারতের পার্লামেন্টের নিম্নকক্ষ লোকসভায় তাদের আসন সংখ্যা হবে ২৪০। বিজেপি এবার তাদের জন্য ৩৭০ আসন আর এনডিএ জোটের জন্য ৪০০ আসনের লক্ষ্য র্নিধারণ করেছিল।
নির্বাচন কমিশন ঘোষিত ফলাফলে তারা ইতোমধ্যে তিনটি আসনে জয়ী হয়েছে আর এগিয়ে রয়েছে ২৩৭টি আসনে।ভারতের লোকসভার আসন সংখ্যা ৫৪৩টি। এই পরিষদে কোনো দলের একক সংখ্যাগরিষ্ঠতা পেতে ২৭২টি আসনে জয়ী হতে হবে। ২০১৯ এর লোকসভা নির্বাচনে বিজেপি একাই ৩০৩টি আসনে জয়ী হয়ে নিরঙ্কুশ সংখ্যাগরিষ্ঠাতা পেয়েছিল, কিন্তু এবার তারা তা হারাতে যাচ্ছে বলেই পরিষ্কার ধারণা পাওয়া যাচ্ছে।
অথচ ১ জুন ভোট গ্রহণ শেষ হওয়ার পর থেকে সবগুলো কেন্দ্রফেরত জরিপে বিজেপি বিশাল জয় পেতে যাচ্ছে বলে ভবিষ্যদ্বাণী করা হয়েছিল। কোনো কোনো জরিপে সংস্থা আরও এগিয়ে বিজেপির এনডিএ জোট ৪০০ কি তার বেশি আসন পেতে যাচ্ছে বলে জোর দিয়ে জানিয়েছিল। কিন্তু কেন্দ্রফেরত সেসব জরিপের ভবিষ্যদ্বাণী অসার প্রমাণিত হচ্ছে।
লোকসভা নির্বাচনের সম্ভাব্য ফলাফল সম্পর্কে কেন্দ্রফেরত জরিপের জয়-পরাজয়ের আভাস আমলে না নিয়ে পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেছিলেন, এগুলোর কোনো গুরুত্ব নেই। দেশটির নির্বাচন কমিশনের প্রকাশিত সর্বশেষ ফলাফলে মমতার কথাই সত্য বলে প্রমাণিত হচ্ছে।অধিকাংশ জরিপে পশ্চিমবঙ্গের ৪২টি মধ্যে এবার মমতার তৃণমূল কংগ্রেসের চেয়ে নরেন্দ্র মোদীর বিজেপির বেশি আসন জয়ের আভাস এসেছে। এ নিয়ে উচ্ছ্বসিত ছিলেন রাজ্যটির বিজেপির নেতাকর্মীরা। এমন কি মমতার জনপ্রিয়তা কমার ‘প্রমাণ’ হিসেবেও কেউ কেউ দেখেছেন বিষয়টিকে।
কিন্তু মঙ্গলবার বেলা ৩টা পর্যন্ত ঘোষিত প্রাথমিক ফলাফলে দেখা গেছে, এ রাজ্যের ৪২টি আসনে মধ্যে পশ্চিমবঙ্গ রাজ্য সরকারে থাকা তৃণমূল এগিয়ে আছে ৩১টি আসনে। আর ভারতের ক্ষমতাসীন দল বিজেপি এগিয়ে আছে ১০টি আসনে।
দেশব্যাপী নির্বাচনের ফলাফলেও একইরকম চিত্র দেখা গেছে। কেন্দ্রফেরত জরিপে রাহুল গান্ধীর নেতৃত্বাধীন ইন্ডিয়া জোট ১৪০ থেকে ১৫০টি আসনে পেতে পারে এমন আভাস দেওয়া হলেও তারা এখন ২২৯টি আসনে এগিয়ে রয়েছে। ইতোমধ্যে রাহুল গান্ধীর দল কংগ্রেস দুইটি আসনে জয় পেয়েছে আর এগিয়ে রয়েছে আরও ৯৭টি আসনে।