আব্দুল্লাহ আল মামুন
আজ বিকেল ৩ টায় (মঙ্গলবার, ১০ সেপ্টেম্বর) ওসমানী পৌর স্টেডিয়ামে বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের অভ্যূত্থান পরবর্তী সমাবেশের অংশ হিসেবে ছাত্র নাগরিক মত বিনিময় সভায় যোগদান করে বক্তব্য প্রদান করেন সমন্বয়ক সারজিস আলম।
বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের অন্যতম সমন্বয়ক সারজিস আলম বলেন, এই ছাত্র জনতার হাতেই ভবিষ্যতের বাংলাদেশ দেখতে চাই। আজ যে ছাত্র ছাত্রীরা আমাদের সঙ্গে দাঁড়িয়েছে তারাই সংসদে এক একজন মন্ত্রী, এমপি এমন কি নারায়ণগঞ্জ থেকেই প্রধানমন্ত্রী হিসেবে দেখতে চাই। ছাত্রদের একটি অংশকে ব্যবহার করার জন্য কিছু ব্যক্তিগত বিভিন্ন জিনিসের লোভ দেখিয়ে তাদের বিভিন্ন নামে ব্যবহার করছে। তার একটি নাম হল কিশোর গ্যাং। যারা আমাদের ছাত্র-ছাত্রীদের কিশোর গ্যাং বলছে তারা এই ছাত্র-ছাত্রীদের লাঠিয়াল বাহিনী হিসাবে ব্যবহার করতে চায়। ছাত্র জনতা কারো লাঠিয়াল বাহিনী হবে না। আপনাদের এমন ভাবে গড়ে তুলতে হবে নিজেকে যাতে আপনারা নিজের উপর স্বাবলম্বী হোন। কোনো ভাইয়ের উপর নির্ভর করতে না হয়। আন্দোলনকারীর প্রত্যেকে এক একজন সমন্বয়ক। নারায়ণগঞ্জে আসার আগেও আমরা নারায়ণগঞ্জের কিছু খবর নিতে চেয়েছি। আমরা জেনেছি যে কিছু সংখ্যক মানুষ একটি সমগ্র গোষ্ঠীকে জিম্মি করে ব্যবসা পরিচালনা করছে। হকারদের শুরু থেকে শুরু করে গার্মেন্টস এবং অটোস্ট্যান্ডে যে চাঁদাবাজি চলছে এখানে সেটা ছাত্র জনতা সমর্থন করে না।
সভায় তিনি আরও বলেন, শেখ হাসিনা থাকাকালীন অবস্থায় চাঁদাবাজি, মামলা দিয়ে হয়রানি, সহ নানা অপকর্ম করেছে আজ যদি অন্য কিছু মানুষ একে অপরাধ করে তাহলে আমরা তাদের কেউ সমর্থন করি না। যে তরুণ প্রজন্ম আসছে তারা একটি সুন্দর বাংলাদেশ চায়। আমাদের যখন দরকার পড়বে তখন রাজপথে স্লোগান দিবো, রাজপথে থেকে স্বৈরাচারকে সড়াবো, বাবাকে মাকে বলে জীবন বাজি রেখে রাস্তায় আসবো, শেখ হাসিনার মতো যে কোন ফ্যাসিস্ট কে দেশছাড়া করবো। দরকার হলে ২৪ এর মত গণঅভ্যুত্থান ঘটাবো।
সারজিস আরও বলেন, তরুণদের যোগ্য হয়ে উঠতে হলে তাদের সুশিক্ষায় দক্ষতার সাথে গড়ে তুলতে হবে। ছাত্রদের অনেক কাজে থাকতে পারে কিন্তু প্রধান কাজ হলো হচ্ছে পড়াশোনা। ছাত্রদের কাছে আমার অনুরোধ সকল কাজের সাথে আমাদের পড়ালেখাটাও যেন ঠিক থাকে। সব কাজের পাশে পড়াশোনায় যেন ভালো করতে পারি। আমাদের ভালো বিশ্ববিদ্যালয় থেকে গ্র্যাজুয়েশন কমপ্লিট করতে হবে। আপনাদের লেখাপড়ার সময়টাকে যারা ব্যবহার করতে চায় তারা কখনো ভালো মানুষ ছিল না, তারা ভালো মানুষ না। এই নারায়ণগঞ্জের রমরমা মাদকের ব্যবসা চলে। যারা এই মাদক দিয়ে ছাত্রদের বিপথে নিতে চায়, তাদের পক্ষে ছাত্রজনতা দাঁড়াতে পারে না। আমাদের এই ছাত্রজনতার ওপর যারা হামলা করেছে তাদের বিচার না দেখা পর্যন্ত আমাদের শান্তি নেই। যেই চিহ্নিত সন্ত্রাসীরা আমাদের ভাইয়ের ওপর নির্মম গুলি চালিয়েছে তাদের গ্রেফতার করে বিচারের আওতায় আনতে হবে।
সারজিস স্মরণ করিয়ে দেন, নারায়ণগঞ্জ হলো প্রাচ্যের ড্যান্ডি। যখন মানুষ সিলেট রংপুরের নাম জানতো না তখন থেকে তারা ঐতিহ্যবাহী নারায়ণগঞ্জকে চেনে।
আর সেই নারায়ণগঞ্জের গর্বিত সন্তান হচ্ছেন আপনারা। নারায়ণগঞ্জের একটা শ্রেষ্ঠ জেলা হিসেবে পরিচিত পাওয়ার দায়িত্ব আপনার। আজ থেকে শুধু ডাক্তার ইঞ্জিনিয়ার না, একজন দক্ষ ও সৎ রাজনীতিবিদ হওয়ার স্বপ্ন দেখবেন। ২৪ এর যে স্পিরিট কাজ করেছে সেটা যেন কোনো অপশক্তি দমাতে না পারে।
মত বিনিময় সভা শেষে ঢাকার উদ্দেশ্যে বিকাল ৫ টায় রওনা করেন সারজিস আলম।