স্টাফ রিপোর্টার
দুই দেশের গান, নৃত্য ও সাংস্কৃতিক পরিবেশনার মধ্য দিয়ে জাপানের নারুতো ও বাংলাদেশের নারায়ণগঞ্জ সিটির মধ্যে ‘বন্ধুত্ব চুক্তির’ বর্ষপূর্তি উদযাপিত হয়েছে। বুধবার (২৯ মে) সকাল ১০টায় নগরীর আলী আহাম্মদ চুনকা নগর পাঠাগার ও মিলনায়তনে দিনব্যাপী এই আয়োজন শুরু হয় এবং বিকেল ৫টায় এর সমাপ্তি ঘটে।
এই সময় উপস্থিত ছিলেন নারায়ণগঞ্জ সিটি কর্পোরেশনের মেয়র ডা. সেলিনা হায়াৎ আইভী, বাংলাদেশে নিযুক্ত জাপানের রাষ্ট্রদূত ইয়োমা কিমিওনারি ও জাপানের ব্যবসায়ী প্রতিনিধি দল। জাপানের নারুতো সিটি মেয়র মিচিহিকো ইজোমি ভার্চুয়ালি তার বক্তব্য রাখেন। ২০২৩ সালের ২৮ মার্চ ‘ফ্রেন্ডশীপ সিটি’ হিসেবে দুই দেশের নারায়ণগঞ্জ ও নারুতো সিটির মধ্যে সংস্কৃতি, অর্থনীতি, শিক্ষা ও মানবসম্পদ বিনিময়ে চুক্তি স্বাক্ষর হয়।এই বন্ধুত্বের বর্ষপূর্তি অনুষ্ঠানে মেয়র ডা. সেলিনা হায়াৎ আইভী বলেন, গত বছর আমরা জাপানে নারুতো সিটিতে চারটি বিষয়ের উপর ফ্রেন্ডশীপ সিটি চুক্তি স্বাক্ষর করি। তবে, এর আগে এ চুক্তির পেছনে ছয় থেকে সাত বছর সময় ব্যয় করতে হয়েছে। ওই সময় দুই দেশের রাষ্ট্রদূতরা এই কাজে সহযোগিতা করেছেন এবং এখনও করে যাচ্ছেন।
আইভী বলেন, নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশনের সহযোগিতায় জাপানিজ ল্যাঙ্গুয়েজ ট্রেনিং সেন্টারের মাধ্যমে ইতোমধ্যে ১৭ জন কর্মীকে জাপানে পাঠানো হয়েছে। আমরা শিক্ষা ও সংস্কৃতি খাতেও কাজ করছি। শিক্ষার জন্য যারা যেতে চাইবে তাদের আমরা সহযোগিতা করবো। তবে, এক্ষেত্রে মূল শর্ত হচ্ছে ভাষা শিক্ষা। জাপান কৃষিখাতেও মানুষ নিতে আগ্রহী। বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্কের নিদর্শন হিসেবে জাপান থেকে ৩০টি সাকুরা গাছ নারায়ণগঞ্জে পাঠানো হয়েছে, যার মধ্যে এখনও সাতটি বেঁচে আছে বলে জানান নাসিক মেয়র।তিনি বলেন, এছাড়া দুই দেশের সংস্কৃতি বিনিময়ের লক্ষ্যে নগরভবনের সামনে একটি দোকান স্থাপন করা হয়েছে যেখানে জাপান ও বাংলাদেশে তৈরি পণ্য কিনতে পাওয়া যায়। বঙ্গবন্ধু থাকতে ১৯৭১ সাল থেকে জাপান আমাদের খুব ভালো বন্ধু। সেই বন্ধুত্বের নজির তারা ইতোমধ্যে রেখেছে। দুই দেশের মধ্যে অর্থনৈতিক সম্পর্ক বাড়াতে নারায়ণগঞ্জের আড়াইহাজারে জাপানের সাথে যৌথভাবে বাংলাদেশ সরকার বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চল করেছে।
বর্ষপূর্তির এই আয়োজনে উপস্থিত হয়ে আনন্দ প্রকাশ করে জাপানিজ রাষ্ট্রদূত ইয়োমা কিমিওনারি বলেন, জাপান ও বাংলাদেশের দুই সিটির মধ্যে বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক ফলপ্রসু করতে উভয়ের প্রচেষ্টার জন্য আমি তাদের আন্তরিক কৃতজ্ঞতা জানাই। এখানে বিভিন্ন ব্যবসায়ী কোম্পানির প্রতিনিধিরা উপস্থিত আছেন যারা বাংলাদেশ থেকে জাপানে কর্মী যাওয়া-আসার কাজের সাথে জড়িত। আমি জেনেছি, জাপানে বাংলাদেশি অভিজ্ঞ শ্রমিকদের ব্যাপারে আগ্রহ বাড়ছে। আশা করবো, এই ধারাবাহিকতা বজায় থাকবে।দুই সিটির মধ্যে এই সম্পর্ক বজায় রাখতে জাপানিজ অ্যাম্বাসি সবসময় সহযোগিতা করবে বলেও আশ্বস্ত করেন এই রাষ্ট্রদূত।
জাপান ও বাংলাদেশের সংস্কৃতিকে তুলে ধরতে এই সময় সাংস্কৃতিক পরিবেশনা করা হয়। অডিটোরিয়ামের নিচতলায় অবস্থিত মিনিপ্লেক্স সিনেস্কোপে একটি জাপানি চলচ্চিত্রও প্রদর্শিত হয়।