স্টাফ রিপোর্টার
রোহিঙ্গাদের নিয়ে আগে থেকে যেসব আশঙ্কা করা হয়েছিল তার কিছু কিছু আলামত দেখা যাচ্ছে বলে মন্তব্য করেছেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল।
তিনি বলেছেন, “মিয়ানমার থেকে বিতাড়িত এসব রোহিঙ্গাদের ভবিষ্যৎ অনিশ্চিত। আমরা আগে থেকেই বলে আসছিলাম, এদের দ্রুত সময়ের মধ্যে স্বদেশ মিয়ানমারে ফেরত পাঠানো না গেলে এখানে অস্থিরতা তৈরি হতে পারে।
“এখানে আন্তর্জাতিক সন্ত্রাসীদের হাব তৈরি হতে পারে। অস্ত্রের ঝনঝনানি হতে পারে। অনেক কিছুই হতে পারে। কিছু কিছু আলামত আমরা দেখতে পাচ্ছি।”শুক্রবার কক্সবাজারের উখিয়ার রোহিঙ্গা ক্যাম্প পরিদর্শনের সময় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল এসব কথা বলেন। মন্ত্রী বেলা ১১টায় উখিয়ার ১৯ নম্বর ঘোনার পাড়া রোহিঙ্গা ক্যাম্পের এপিবিএন কার্যালয়ে যান। সেখানে সোয়া ১২টা পর্যন্ত এপিবিএন কর্মকর্তারদের সঙ্গে সভা করেন। এরপর সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলেন তিনি।
স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, “মিয়ানমারের ভেতরে যারা যুদ্ধ করছে, তাদের কয়েকজনের আনাগোনা এখানে (রোহিঙ্গা ক্যাম্পে) দেখা যাচ্ছে। সবচেয়ে বড় ভয়ের বিষয় হচ্ছে আমাদের দেশ কোনো মাদক উৎপাদন করে না। কিন্তু মিয়ানমার থেকে মাদক আসছে অনেক আগে থেকে।“এখন ক্যাম্পের কিছু লোক মাদকের সঙ্গে জড়িয়ে গেছে। আমরা তাদের চিহ্নিত করার চেষ্টা করছি। একই সঙ্গে অস্ত্র ও খুনে জড়িতদেরও চিহ্নিত করার চেষ্টা চলছে।”
তাদের চিহ্নিত করে আইনের আওতায় আনাই এখন তাদের মূল কাজ বলে জানান আসাদুজ্জামান খান কামাল।
স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী সাংবাদিকদের বলেন, “রোহিঙ্গা ক্যাম্পে এসে নিরাপত্তা কাজে নিয়োজিত এপিবিএনের সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে আলাপ-আলোচনা করে তাদের চ্যালেঞ্জ ও সুবিধা-অসুবিধাগুলো জেনেছি। তাদের বলেছি, বাংলাদেশ একটি ইতিহাস সৃষ্টি করেছে জঙ্গি-সন্ত্রাস দমনের মধ্য দিয়ে।“এপিবিএন রোহিঙ্গা ক্যাম্পের নিরাপত্তা দিয়ে বাংলাদেশের এগিয়ে যাওয়ার সহযোগিতা করছেন। এপিবিএন তাদের দায়িত্ব পালন করছেন বলেই রোহিঙ্গা ক্যাম্পের পরিস্থিতি শান্তিপূর্ণ এবং নিয়ন্ত্রিত।”
সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের উত্তরে মিয়ানমারের কথার সঙ্গে কাজের মিল নেই বলেও মন্তব্য করেছেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী।
রোহিঙ্গা ক্যাম্পে ‘অস্ত্রের ঝনঝনানি’ নিয়ে যা বললেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী
এ প্রসঙ্গে তিনি বলেছেন, “আন্তর্জাতিক সংস্থাসহ বাংলাদেশ রোহিঙ্গা ফেরত পাঠানো নিয়ে তৎপরতা চালিয়ে যাচ্ছেন। মিয়ানমার একটি অস্থিরশীল দেশ; ওখানে যুদ্ধ-যুদ্ধ খেলা চলছে।
“বিভিন্ন সময় মিয়ানমারের সঙ্গে রোহিঙ্গা ফেরত নিয়ে নানা চুক্তি বা সমঝোতায় স্বাক্ষর হলেও তা মিয়ানমারের কারণে অগ্রগতি হয়নি। আশা করি, মিয়ানমার দ্রুত সময়ের মধ্যে রোহিঙ্গাদের ফেরত নেবেন।”
সাংবাদিকের সঙ্গে আলাপের পর স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী রোহিঙ্গা ক্যাম্পটির এ-৭ ব্লকের পাহাড়ি এলাকা পরিদর্শন করেন। সেখান থেকে টেকনাফে গিয়ে বিজিবির সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে আলোচনা করেন তিনি।
পুলিশের মহাপরিদর্শক চৌধুরী আব্দুল্লাহ আল মামুন, শরণার্থী ত্রাণ ও প্রত্যাবাসন কমিশনার মো. মিজানুর রহমান, এপিবিএন প্রধান সেলিম মোহাম্মদ জাহাঙ্গীর, অতিরিক্ত মহাপরিদর্শক আনোয়ার হোসেন, পুলিশের চট্টগ্রাম রেঞ্জের ডিআইজি নুরে আলম মিনাসহ আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর ঊধ্বর্তন কর্মকর্তারা স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর সঙ্গে উপস্থিত ছিলেন।