গণমাধ্যম নিউজ
সাবেক পুলিশ প্রধান বেনজীর আহমেদের সম্পত্তি জব্দের ঘটনা ‘লোক দেখানো’ বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।
শনিবার এক আলোচনা সভায় তিনি বলেন, ‘‘পত্রিকা দেখলাম, বেনজীর চলে গেছে…হি লেফট দ্যা কান্ট্রি। মে মাসের ৪ তারিখে সপরিবারে চলে গেছে। যাওয়ার আগে তার অ্যাকাউন্টগুলো সমস্ত সে খালি করে গেছে, ফিক্সড অ্যাকাউন্টগুলো-সেখানে ৬০ কোটি টাকার মতো যেটা পত্রিকায় এসেছে, হয়ত আরো বেশিও হতে পারে।
“আমার প্রশ্ন সে কীভাবে গেল? এই যে তারা (সরকার) বললো যে, ‘তার সম্পত্তি আমরা ক্রোক করছি’। আদালত থেকে বলালো, দুদক থেকে মামলা করেছে। তাকে কোথাও যেতে দেওয়া হবে না, এসব বলা হলো। তাহলে ৪ তারিখ সপরিবারে সিঙ্গাপুর এয়ারলাইন্সে করে কীভাবে চলে গেল-সরকারের চোখের নাকের ওপর দিয়ে।”বিএনপি মহাসচিব বলেন, “তাহলে এই যে কথা বলছেন যে, ‘কেউ ছাড় পাবে না, আমরা সবারই বিচার করি’। এটা কি আপনি বাংলাদেশের মানুষ সবাইকে আহম্মক মনে করেছেন? বাংলাদেশের মানুষ তো আহম্মক না।
“সবাই বোঝে, এগুলো সব আপনাদের লোক দেখানো, প্রতারণা…এখন পর্যন্ত এই প্রতারণা করে আপনারা দেশ শাসন করেছেন।”
বিএনপি প্রতিষ্ঠাতা জিয়াউর রহমানের ৪৩তম শাহাদাৎ বার্ষিকী উপলক্ষে জাতীয় প্রেস ক্লাবের আবদুস সালাম হলে এ আলোচনা সভার আয়োজন করে সম্মিলিত পেশাজীবী পরিষদ।‘লুটের দেশে পরিণত হয়েছে’
মির্জা ফখরুল বলেন, “আমি সেদিনও বলেছি, শুধু বেনজীর নয়, এক আজিজ (আজিজ আহমেদ) নয়, অসংখ্য আজিজ আর বেনজীর তারা তৈরি করেছে। সবসময় মনে রাখতে হবে, এরা বাংলাদেশটাকে একটা লুটের সামাজ্যে পরিণত করেছে। লুটপাট, বর্গীর দেশে পরিণত করেছে। এখান থেকে আমাদের দেশটাকে রক্ষা করতে হবে।
“আমরা বিশ্বাস করি, বাংলাদেশের মানুষ লড়াই-সংগ্রামের মধ্য দিয়ে এই দানব যে আছে, যে মনোস্টার সব তছনছ করে দিচ্ছে; তাকে আমরা পরাজিত করে সত্যিকার অর্থে একটা জনগণের সরকার, গণতন্ত্রের সরকার প্রতিষ্ঠা করতে সক্ষম হব।”‘আন্দোলনে সাফল্য আনতেই হবে’
বিএনপি মহাসচিব বলেন, “গণতন্ত্রের জন্য আমরা লড়াই-সংগ্রাম করছি। একটা কথা আমাদের মনে রাখতে হবে, বিজয় আমাদের অর্জন করতেই হবে, সাফল্য আমাদের আনতেই হবে। আজকে এই পেশাজীবীদের আলোচনার মধ্য দিয়ে আমরা একটা জিনিস পরিষ্কার করে বলতে চাই, বাংলাদেশে বিএনপি কখনোই তার অভিষ্ট লক্ষ্য থেকে সরে দাঁড়াবে না।
‘‘তার লক্ষ্য অটুট আছে। কৌশল অনেক সময় পরিবর্তন হতে পারে, সেটাই করি; আলোচনা করে ঠিক করব।”
ফখরুল বলেন, “একটা কথা আমাদের মনে রাখতে হবে আমাদের যে রাজনীতিটা জিয়াউর রহমান সাহেব যে পতাকা তুলে ধরেছিলেন, সেই পতাকা…বাংলাদেশি জাতীয়তাবাদের রাজনীতির যে দর্শন, স্বাধীনতা-সার্বভৌমত্ব গণতন্ত্রের যে দর্শন সেটা পরবর্তীকালে তুলে নিয়ে এগিয়ে গেছেন আমাদের দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়া।
“এখনো কিন্তু আমাদের নেতা তারেক রহমান সাহেবের নেতৃত্বে আমরা সেই পতাকাকে নিয়ে এগুচ্ছি। তারেক রহমান সাহেব সেই বিশ্বাসেই এগিয়ে চলেছেন, দিনরাত পরিশ্রম করছেন, আমাদের সকলকে সংগঠিত করবার চেষ্টা করছেন।”
বিএনপি মহাসচিব বলেন, ‘‘একটা কথা আমাদের সকলকে মনে রাখতে হবে, সাকসেস হ্যাজ অনলি ফেভারস। যখন সাফল্য আসে তখন সবাই দাবি করে যে আমার জন্য হয়েছে, আমার জন্য হয়েছে। ফেইলিউর হ্যাজ নান।
‘‘আমরা মনে করি, আমরা ব্যর্থ নই। আমরা নতুন করে উজ্জীবিত হয়েছি, আমরা নতুন করে আবার কাজ শুরু করেছি। ইনশাল্লাহ জয় আমাদের হবেই। কারণ আমরা সত্যের পথে ন্যায়ের পথে লড়াই করছি।”
সম্মিলিত পেশাজীবী পরিষদের আহ্বায়ক অধ্যাপক এ জেড এম জাহিদ হোসেনের সভাপতিত্বে ও সদস্য সচিব কাদের গণি চৌধুরীর সঞ্চালনায় আলোচনা সভায় বক্তব্য দেন অধ্যাপক দিলারা চৌধুরী, রুহুল আমিন গাজী, অধ্যপক আাফম ইউসুফ হায়দার, অধ্যাপক তাজমেরী এস এ ইসলাম, অধ্যাপক আব্দুল কুদ্দুস, আইনজীবী মাসুম আহমেদ তালুকদার, অধ্যাপক গোলাম হাফিজ কেনেডি, অধ্যাপক লুৎফুর রহমান, অধ্যাপক এ বি এম ওবায়দুল ইসলাম, অধ্যাপক অধ্যাপক কামরুল আহসান, অধ্যাপক শামসুল আলম সেলিম, রিয়াজুল ইসলাম রিজু, মোস্তাফিজুর রহমান, শহীদুল ইসলাম, সৈয়দ আবদাল আহমেদ, ডা. রফিকুল ইসলাম, শামীমুর রহমান শামীম, এসএম রফিকুল ইসলাম বাচ্চু, শহিদুল ইসলাম বাবুল, ফখরুল আলম, কাজী সাখাওয়াত হোসেন, জাহানারা সিদ্দিকী, বিপ্লবুজ্জামান বিপ্লব, জিয়াউল হায়দার পলাশ, তানভীরুল আলম, রফিকুল ইসলাম।