স্টাফ রিপোর্টার
সাবেক পুলিশপ্রধান বেনজীর আহমেদ ও সাবেক সেনাপ্রধান আজিজ আহমেদ আওয়ামী লীগের আসল চেহারা বলে দাবি করেছেন বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।তিনি বলেন, গত কিছুদিন ধরে পত্রিকা খুললেই বেনজীরের নজিরবিহীন দুর্নীতির খবর দেখছি। একইসঙ্গে সাবেক সেনাপ্রধান। তাকেও নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে। আর তাদের তথাকথিত সংসদ সদস্যকে কলকাতায় নিয়ে টুকরো-টুকরো করেছে। এই হচ্ছে আওয়ামী লীগের আসল চেহারা।
সোমবার (৩ জুন) রাজধানীর জাতীয় প্রেসক্লাবে এক আলোচনা সভায় এসব কথা বলেন তিনি। বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা জিয়াউর রহমানের মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে এ সভার আয়োজন করে জাতীয়তাবাদী মহিলা দল।
মির্জা ফখরুল বলেন, যখন সাবেক প্রধানকে নিষেধাজ্ঞা দেয়, তখন সেই পুলিশ বাহিনীর মর্যাদা কোথায় থাকে? যখন তাদের সাবেক প্রধানকে দেশ থেকে পালিয়ে যেতে হয়, তখন সেই বাহিনীর সম্মান কোথায় থাকে? আজ এভাবে তারা দেশটাকে ধ্বংস করে ফেলেছে।
তিনি বলেন, দ্রব্যমূল্যের দাম এত বেড়েছে যে মানুষ ডিম কিনতে পারছে না। বাচ্চাদের ডিম খেতে দিতে পারছে না। মানুষ তার সন্তানদের লেখাপড়ার খরচ জোগাতে পারছে না। অন্যদিকে কেউ কেউ আবার ৩০-৪০ লাখ টাকা দিয়ে গরু কিনছে। এটা কেন? এই দেশের অর্থনীতিকে এমন জায়গা নিয়ে যাওয়া হয়েছে, ধনীকে আরও ধনী করছে, আর গরীবকে আরও গরীব করছে।আওয়ামী লীগ জিয়াউর রহমানের নামকে মুছে ফেলতে চায় অভিযোগ করে মির্জা ফখরুল বলেন, সৈনিক জিয়ার ডাকে স্বাধীনতার যুদ্ধ শুরু হয়েছে, এটাকে তারা মুছে ফেলতে চায়। আওয়ামী লীগ শুধু একজন মানুষকে মহিমান্বিত করার জন্য তাদের পুরো ক্ষমতার অপব্যবহার করে চলেছে। আমরা শেখ মুজিবের অবদানকে কখনো অস্বীকার করি না। কিন্তু কী করে অস্বীকার করা যাবে, যার ঘোষণায় আমরা স্বাধীনতার যুদ্ধ শুরু করেছিলাম। যারা এটা করতে চায়, এটা যে তাদের রাজনৈতিক সংকীর্ণতা সেটা প্রমাণ হয়।
জিয়াউর রহমানের সৃষ্টি করা বিএনপি এখন বাংলাদেশের সবচেয়ে বৃহৎ রাজনৈতিক দল বলেও উল্লেখ করেন মির্জা ফখরুল। তিনি বলেন, তার আদর্শ সবচেয়ে বড়। এখানে আরেকজনের কথা বলতে চাই, তিনি হলেন আমাদের নেত্রী বেগম খালেদা জিয়া। যুদ্ধের সময় ১৬ ডিসেম্বর পর্যন্ত তিনি কারাগারে ছিলেন। আমি যখন তাকে বাংলাদেশের প্রথম নারী মুক্তিযোদ্ধা বলি, তখন আওয়ামী লীগের গা জ্বালা করে। কারণ তাদের নেত্রী তো মুক্তিযুদ্ধ করেননি। আমি কারো সমালোচনা করতে চাই না, যার যে অবদান সেটা স্বীকার করে নেওয়াই হচ্ছে মহত্ত্বের লক্ষণ।
আওয়ামী লীগ ১৯৭১-৭৫ সাল পর্যন্ত শাসনকালে ৩০ হাজার রাজনৈতিক নেতাকর্মীকে হত্যা করেছে, নারীর ওপর নির্যাতন করেছে বলে দাবি করেন মির্জা ফখরুল। তিনি বলেন, এখন তারা নারীর ওপর নির্যাতন করতে দ্বিধা করছে না। আজ যারা জেলে গেছেন, সাজাপ্রাপ্ত হয়েছেন, তাদের অপরাধ কী? অপরাধ তো একটাই স্বাধীনতা চাই, কথা বলতে চাই, ভোট দিতে চাই। আর এখানেই আওয়ামী লীগের আপত্তি, তারা এগুলো করতে দেবে না।
প্রাথমিক স্কুলের বইতে সরকার মিথ্যা তথ্য প্রচার করে চলছে বলে দাবি করে বিএনপি মহাসচিব বলেন, সেখানে একজনের নাম ছাড়া কারো নাম নেই। সেখানে তাদের নেতা তাজউদ্দীন আহমদের নাম নেই। জেনারেল ওসমানীর নামও নেই। এক নেতা, এক দেশ, বঙ্গবন্ধুর বাংলাদেশ-এটাই তারা আজ প্রচার করছে। তারা দীর্ঘকাল ধরে দেশকে শোষণ করছে, দুর্নীতি করছে।
সভায় বক্তব্য দেন মহিলা দলের সভাপতি আফরোজা আব্বাস, সাধারণ সম্পাদক সুলতানা কামাল প্রমুখ।