1. [email protected] : Parves Sharif : Parves Sharif
  2. [email protected] : skriaz30 :
সংকটের মধ্যে দেওয়া বাজেটে অর্থমন্ত্রীর চ্যালেঞ্জ - গণমাধ্যম
December 23, 2024, 9:31 am
সর্বশেষ
শেখ হাসিনার বিদ্বেষমূলক বক্তব্য প্রচারে অপরাধ ট্রাইব্যুনালের নিষেধাজ্ঞা নারায়ণগঞ্জে আন্তর্জাতিক স্বেচ্ছাসেবক দিবস উদ্বোধন করলেন স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা বন্দরে গরু চোরের উপদ্রব বৃদ্ধি, এক খামারীর চার গরু চুরি চীনে গোপনে ড্রোন প্রকল্প চালু করেছে রাশিয়া তরুণরা ‘রিসেট বাটন’ চেপেছে, সব পুরনো শেষ: নিউ ইয়র্কে ড.ইউনূস দূর্গাপূজায় নিশ্ছিদ্র নিরাপত্তা নিশ্চিতে পুলিশ-প্রশাসন ও সেনাবাহিনী তৎপর: ডিসি নারায়ণগঞ্জে দুই শিশু এক নারী সহ নিহত ৫৬জনের তালিকা গোগনগর গাউসিয়া কমিটির উদ্যোগে জশনে জুলুছে ঈদে মিলাদুন্নবী (সঃ) উদযাপন দেওয়ানবাগ দরবার শরীফ ও বিভিন্ন মাজারে হামলার প্রতিবাদে সংবাদ সম্মেলন নারায়ণগঞ্জ থেকে প্রধানমন্ত্রী দেখতে চাই : সারজিস

সংকটের মধ্যে দেওয়া বাজেটে অর্থমন্ত্রীর চ্যালেঞ্জ

Reporter Name
  • Update Time : Thursday, June 6, 2024,

গণমাধ্যম নিউজ
সাবেক অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তাফা কামাল ধারণা করেছিলেন, বিদায়ী অর্থবছরে টাকা রাখার জায়গা পাবেন না তিনি। গত বছরের ১ জুন বাজেট পেশ করে তিনি প্রথম আলোকে জানিয়েছিলেন, টাকার কোনো টানাটানি থাকবে না, কারণ কয়েক সপ্তাহ পর যে সর্বজনীন পেনশন কর্মসূচি চালু হতে যাচ্ছে, এর কল্যাণে তাঁর হাতে প্রচুর টাকা আসবে। গত বছরে বাজেটের আকার প্রায় সাড়ে ১২ শতাংশ বাড়িয়েছিলেন তিনি। ফলে অভ্যন্তরীণ রাজস্ব আদায়ে দুর্বল পারফরম্যান্সের মধ্যে বাজেটের জন্য অর্থ সংস্থানের প্রশ্ন ওঠাটাই ছিল স্বাভাবিক। তবে মুস্তাফা কামাল উচ্ছ্বসিত ছিলেন, হয়তো টাকা রাখার জায়গাও খুঁজছিলেন।
বিদায়ী অর্থবছরে ছয় মাস অর্থ মন্ত্রণালয়ের দায়িত্বে ছিলেন মুস্তাফা কামাল। তত দিনে এটা পরিষ্কার হয়েছে, সর্বজনীন পেনশন কর্মসূচিতে মানুষ আগ্রহ পাচ্ছেন না। সাড়া এখনো খুব দুর্বল। ফলে বাজেট বাস্তবায়নে সরকারকে শেষ পর্যন্ত ঋণের ওপরই বেশি নির্ভর করতে হয়েছে। এই ঋণের বড় অংশই এসেছে ব্যাংক-ব্যবস্থা থেকে। বিদেশি ঋণও নিতে হয়েছে বড় পরিমাণে। ফলে সরকারকে বিপুল পরিমাণ অর্থ খরচ করতে হয়েছে সুদ পরিশোধে, যে ধারা চলবে আগামী অর্থবছরও। সামষ্টিক অর্থনৈতিক স্থিতিশীলতার ক্ষেত্রে ক্রমবর্ধমান সুদ পরিশোধ একটা বড় মাথাব্যথা হিসেবে আবির্ভূত হতে চলেছে। তবে মাথাব্যথা এখানেই শেষ হচ্ছে না; অর্থনীতির প্রায় সব ক্ষেত্রেই সরকারকে চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করতে হচ্ছে, ভবিষ্যতে যা আরও বাড়বে। অর্থনীতির যে সংকট, তা দীর্ঘমেয়াদি হচ্ছে। সরকার স্বীকার করুক বা না করুক, অর্থনীতির প্রায় সব সূচকই এখন নেতিবাচক।
দীর্ঘমেয়াদি এই অর্থনৈতিক সংকটের জন্য বহিস্থ ফ্যাক্টর যেমন রয়েছে, তেমনই অভ্যন্তরীণ কারণও কম ভূমিকা রাখছে না। নতুন অর্থমন্ত্রী আবুল হাসান মাহমুদ আলী আজ যখন জাতীয় সংসদে তাঁর প্রথম বাজেট উপস্থাপন করবেন, তখন স্বাভাবিকভাবে প্রত্যাশা থাকবে, তিনি অর্থনৈতিক সংকট থেকে দেশকে বের করে আনার জন্য দরকারি সব পদক্ষেপ নেবেন।
সবার আগে মানুষের চাওয়া, মূল্যস্ফীতির প্রবল চাপ থেকে সরকার যেন তাঁদের স্বস্তি দেয়। মাসের পর মাস ধরে মূল্যস্ফীতি ৯ শতাংশের ওপরে। খাদ্যের মূল্যস্ফীতি এখন ১০ শতাংশের বেশি। শুধু খাদ্য কিনতে গিয়েই বেশির ভাগ মানুষ তাঁদের আয়ের বড় অংশ খরচ করতে বাধ্য হচ্ছেন। গত বাজেটে মূল্যস্ফীতির হার ৬ দশমিক ৫ শতাংশে নামিয়ে আনার এক দুরূহ লক্ষ্য ঠিক করা হয়েছিল। কিন্তু এর জন্য যে পদক্ষেপ নেওয়া দরকার ছিল, সেগুলো এসেছে বছরের শেষ দিকে। সুতরাং বছরজুড়েই মূল্যস্ফীতির চাপে পিষ্ট হয়েছে সীমিত আয়ের মানুষ।
তবে মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণে নেওয়া নীতিবিষয়ক পদক্ষেপগুলো এখন পর্যন্ত কেবল ফাঁকা আওয়াজই করেছে। পৃথিবীর বেশির ভাগ দেশ যখন মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণে সুদের হার বাড়িয়েছে, বাংলাদেশ তখন সে পথে হাঁটেনি। কেন্দ্রীয় ব্যাংক যখন সে পথে গেল, তখন অনেক দেরি হয়ে গেছে। সুদের হার বাড়ানোর সঙ্গে সঙ্গে ডলারের দামও একলাফে অনেকটা বেড়েছে। ফলে বিশ্বে পণ্যমূল্য কমে এলেও বাংলাদেশ যে তার সুফল পাবে না, তা এখন স্পষ্ট।
একই সঙ্গে রাজস্ব আদায়ে আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের (আইএমএফ) দেওয়া লক্ষ্য পূরণ করতে শুল্ক বাড়ছে অনেক পণ্যে। দামি ডলার, ক্রমবর্ধমান সুদহার ও শুল্ক বৃদ্ধি—এই তিন বিষয় পণ্যমূল্যের ওপর প্রভাব রাখবে। ফলে বাজেটীয় কোনো পদক্ষেপের মাধ্যমে মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণের চেষ্টায় এখন অন্তত সাফল্যের মুখ দেখবে বলে মনে হচ্ছে না। দরকার হবে প্রশাসনিক পদক্ষেপ। মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণে সে পথে সরকার যাবে কি না, তা জানতে মানুষ আজ অর্থমন্ত্রীর দিকে নজর রাখবেন।
অর্থমন্ত্রী মাহমুদ আলীর জন্য আরেকটি বড় চ্যালেঞ্জ বৈদেশিক মুদ্রার মজুত বা রিজার্ভ বৃদ্ধি। প্রতিনিয়তই কমছে রিজার্ভ। আমদানি এখনো নিয়ন্ত্রিত খাত। মাত্র তিন মাসেরও কম সময়ের আমদানি দায় মেটানোর মতো রিজার্ভ রয়েছে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের হাতে। একমাত্র সিলভার লাইনিং প্রবাসী আয়। সাম্প্রতিক কয়েক মাসে কিছুটা হলেও বেড়েছে রেমিট্যান্স। অন্যদিকে সামান্য হলেও ইতিবাচক ধারায় ছিল রপ্তানিও। কিন্তু মে মাসের রপ্তানি আয় শুধুই কপালের ভাঁজ বাড়াচ্ছে। দায় পরিশোধে বাংলাদেশের সামর্থ্যের ব্যাপারে আন্তর্জাতিক মহলের আস্থা কেবলই কমছে। বৈশ্বিক বড় রেটিং এজেন্সিগুলো বাংলাদেশের রেটিং অবনমন করেছে।
গোদের ওপর বিষফোড়ার মতো থাকছে ব্যাংক খাতের দুরবস্থা। খেলাপি ঋণ কেবল বাড়ছে, তাই-ই নয়; খেলাপি ঋণ আদায়ের চেষ্টাও মার খাচ্ছে ঋণখেলাপিদের বারবার নানা রকম সুবিধা দেওয়ার কারণে। কিন্তু সুবিধা পেয়েও খেলাপিরা ঋণ ফেরত দিচ্ছেন না। তাঁদের মধ্যে প্রত্যাশা তৈরি হয়েছে যে ভবিষ্যতে আরও সুবিধা পাওয়া যাবে। ব্যাংকের ঋণ যাঁরা লুট করেছেন, তাঁরা বরাবরই স্নেহের পরশ পেয়ে এসেছেন সরকারের কাছ থেকে। প্রশ্ন হলো, নতুন অর্থমন্ত্রী কি এ ক্ষেত্রে কোনো ব্যবস্থা নিতে পারবেন? ব্যাংক খাতকে কীভাবে সংকট থেকে বের করে আনা যায়, অন্তত তার একটি পথনকশার কথা তিনি তুলে ধরবেন—এটা অনেকেই চাইছেন।
মাহমুদ আলী সংসদে আজ যে বাজেট তুলছেন, সেটির আকারে গত বছর সংসদে তোলা বাজেটের তুলনায় ছোট। কাগজে-কলমে নতুন বাজেট গত বাজেটের তুলনায় ৫ শতাংশের একটু কম বাড়ছে। তবে মূল্যস্ফীতি বিবেচনায় নিলে নতুন বাজেট গত বছরের মূল বাজেটের তুলনায় ছোটই থাকবে। গত মে মাসেই মূল্যস্ফীতি ছিল প্রায় ১০ শতাংশ। সুতরাং সীমিত সামর্থ্যের মধ্যেই অর্থমন্ত্রীকে অর্থনৈতিক চাহিদা পূরণ করতে হবে। একই সঙ্গে বরাবরের মতো রক্ষা করতে হবে বড় খেলোয়াড়দের স্বার্থও।
মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণ আর রিজার্ভ বৃদ্ধির পাশাপাশি অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির দিকেও নজর দিতে হবে অর্থমন্ত্রীকে। তবে দেখার বিষয় হবে, দীর্ঘ সময় ধরে চলা সংকটের মধ্যে যখন সংকোচনমূলক বিভিন্ন ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে, তখন পৌনে ৭ শতাংশ প্রবৃদ্ধি অর্জনের জন্য মাহমুদ আলী কী পদক্ষেপ প্রস্তাব করেন।

Please Share This Post in Your Social Media

More News Of This Category
© ২০২8 সর্বসত্ত্ব সংরক্ষিত
Theme Customized BY Sk Mizan