গণমাধ্যম নিউজ
বড় কোনো গোলযোগ ছাড়াই তুলনামুলক কম ভোটারের উপস্থিতিতে দেশের ৮৭ উপজেলায় শেষ হল আরো এক ধাপের ভোট।উপজেলা নির্বাচনের তৃতীয় ধাপে বুধবার সকাল ৮টা থেকে বিকাল ৪টা পর্যন্ত একটানা ভোট চলে এসব উপজেলায়। চেয়ারম্যান, সাধারণ ভাইস চেয়ারম্যান ও মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান পদে ভোট শেষে কেন্দ্রে কেন্দ্রে শুরু হয়েছে গণনা।চট্টগ্রামের পটিয়ায় একটি কেন্দ্রে ব্যালট পেপার ছিনতাইয়ের ঘটনা ঘটেছে। অনিয়মের কারণে ফেনী সদরে আটক হয়েছেন একজন প্রিজাইডিং কর্মকর্তা।রিদপুরের সদরপুরে জালভোট দেওয়ায় একজনকে ছয় মাসের কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে। কশোরগঞ্জের তাড়াইল উপজেলায় পোলিং কর্মকর্তার ‘প্রক্সি’ দিতে গিয়ে একজন আটক হয়েছেন। জালভোটের অভিযোগ উঠেছে নোয়াখালীর কোম্পানিগঞ্জেও।রাজশাহীর পবা ও মোহনপুর উপজেলায় দুই প্রার্থীর সমর্থকদের মধ্যে ধাওয়া পাল্টা ধাওয়ার ঘটনা ঘটেছে। হবিগঞ্জ সদর উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে দায়িত্ব পালনকালে অসুস্থ হয়ে একজন সহকারী প্রিজাইডিং কর্মকর্তার মৃত্যু হয়েছে।ঘূর্ণিঝড় রেমালের তাণ্ডবের পরপরই তৃতীয় ধাপের এ ভোটে আগের দুই ধাপের মতই ভোটের হার তুলনামুলকভাবে কম হবে বলে ধারণা করছেন সংশ্লিষ্টরা।
ভোট তথ্য
• ভোটের এলাকা: ৮৭ উপজেলা
• কেন্দ্র: ৭ হাজার ৪৫০টি
• ভোটকক্ষ: ৫৪ হাজার ৮৯টি
• ভোটার: ২ কোটি ৮ লাখ ৭৫ হাজার ১৮৪ জন
• পুরুষ ভোটার: ১ কোটি ৬ লাখ ৪০ হাজার ৩৪৭ জন
• নারী ভোটার: ১ কোটি ২ লাখ ৩৪ হাজার ৭২৩ জন
• হিজড়া ভোটার: ১১৪ জন
• ১৬টি উপজেলায় ইভিএমে ভোট
• বাকি ৭১ উপজেলায় ভোট হবে ব্যালট পেপারে
নির্বাচন কমিশন সচিব মো. জাহাংগীর আলম দুপুরে সাংবাদিক বলেন, “কোথাও উল্লেখযোগ্য তেমন ঘটনা ঘটেনি, সবখানে শান্তিপূর্ণ নির্বাচন হয়েছে। ভোটার উপস্থিতি দুপুর বেলা পর্যন্ত কোথাও কোথাও কম হলেও ৪টার মধ্যে ভোটার উপস্থিতি বাড়বে বলে আশা করা হচ্ছে।আধা বেলায় ১৭ শতাংশ থেকে ২০ শতাংশের মত ভোট পড়েছে বলে ধারণা দেন সচিব। সে হিসাবে আট ঘণ্টায় প্রায় ৩৫ শতাংশের মত বা তার বেশি ভোটের হার হতে পারে এবার।৮ মে প্রথম ধাপে গড়ে ৩৬% এবং দ্বিতীয় ধাপে ২১ মে গড়ে ৩৮% ভোট পড়ে।তৃতীয় ধাপের নির্বাচনের জন্য তফসিল ঘোষণা হয়েছিল ১১২ উপজেলার। কিন্তু প্রার্থী মৃত্যু, বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতার প্রার্থী নির্বাচিত, মামলার কারণে ভোট স্থগিত এবং রেমালের কারণে সড়ক যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন ও বিদ্যুৎ সরবরাহ বিচ্ছিন্ন থাকায় সব মিলিয়ে ২৫টি নির্বাচন স্থগিত হওয়ায় শেষ পর্যন্ত বুধবার ভোট হয় ৮৭ উপজেলায়।
# এই ধাপে মোট ১ হাজার ১৫২ জন প্রার্থী রয়েছেন।
# তাদের মধ্যে চেয়ারম্যান পদে ৩৯৭ জন, ভাইস চেয়ারম্যান পদে ৪৫৬ জন এবং নারী ভাইস চেয়ারম্যান পদে ২৯৯ জন প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন।
# প্রথম দুই ধাপের ভোটে বেশির ভাগ স্থানে আওয়ামী লীগের স্থানীয় নেতারাই জিতেছেন। এছাড়া বিএনপির বহিষ্কৃতসহ অন্তত ১০ জন জয়ের মুখ দেখেছেন।
সবশেষ ২০১৯ সালের পঞ্চম উপজেলা ভোটে গড়ে ৪১% এর বেশি ভোট পড়ে। ২০১৪ সালে চতুর্থ উপজেলা ভোটে ৬১% এবং তৃতীয় উপজেলা ভোটে ২০০৯ সালে ৬৭.৬৯% ভোট পড়ে। এই হিসেবে গত দেড় দশকের মধ্যে স্থানীয় সরকারের এ নির্বাচনে ভোটের হার এবারই সবচেয়ে কম।
উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে দলীয় প্রতীকে চেয়ারম্যান পদে ভোট করার সুযোগ থাকলেও স্থানীয় সরকারের এ নির্বাচনে দলীয় প্রতীক বা মনোনয়ন দেয়নি ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ। ফলে আওয়ামী লীগ নেতারা নির্বাচন করছেন স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে।অন্যদিকে বিএনপির অল্প কিছু নেতার স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে লড়লেও, দলটি উপজেলা পরিষদের ভোট বর্জন করেছে।দেশের মোট ৪৯৫ উপজেলার মধ্যে নির্বাচন উপযোগী ৪৮৫ উপজেলায় চার ধাপে ভোট হচ্ছে এবার।প্রথম ধাপের ১৩৯ উপজেলায় গত ৮ মে, দ্বিতীয় ধাপে ১৫৬ উপজেলায় ২১ মে ভোট হয়। আগামী ৫ জুন চতুর্থ ধাপের ভোট রয়েছে।